Monday, April 27, 2015

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রেখে সুস্থ থাকুন



কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রেখে সুস্থ থাকুন


 কোলেস্টেরল রক্তের এমন এক উপাদান, যা রক্তে মিশে থাকে। রক্তনালী দিয়ে সারা শরীরে চলাচল করে। শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ রক্ত থেকে কোলেস্টেরল সংগ্রহ করে বিভিন্ন রকম হরমোন প্রয়োজনীয় জিনিস তৈরি করে থাকে। সুতরাং কোলেস্টেরল শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় চর্বিজাতীয় রক্তের উপকরণ, যা নির্দিষ্ট মাত্রা পর্যন্ত প্রয়োজন। কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত হলে তা রক্তনালীতে জমে যায়। আর জমে গেলে রক্তনালী সরু হয়ে রক্ত চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে
ফলে শরীরে অনেক রকম সমস্যা দেখা দেয়। যেমন- হার্টের রক্তনালিতে জমলে বুকে ব্যথা, হার্ট অ্যাটাক; মস্তিস্কের রক্তনালিতে জমলে স্ট্রোক, কিডনির রক্তনালিতে জমলে কিডনি ফেইলর রকম অনেক সমস্যা
আমরা কীভাবে রক্তের চর্বির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারি, তা জানা এবং নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা অত্যন্ত জরুরি।
Þ প্রথমত, আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার অভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে
Þ দ্বিতীয়ত, ওষুধ সেবনের মাধ্যমে আমরা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে পারি

খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন :
খাদ্যতালিকায় শাকসবজি, ফলের পরিমাণ বাড়াতে হবে। আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে। খোসাসহ সবজি খাওয়া ভালো। খাদ্যতালিকা থেকে প্রাণিজ চর্বি বাদ দিতে হবে, যেমন-খাসির মাংস, গরুর মাংস, মুরগির চামড়া, কলিজা, মগজ, মাছের ডিম, ডিমের কুসুম, চিংড়ি মাছ প্রভৃতি।
রান্নায় কম তেল দিতে হবে। তেলে ভাজা খাবার কম খেতে হবে। ভাপে সেদ্ধ, গ্রিলড খাবার খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। ঘি, মাখন, পনির, মেয়নেজ, সালাদ, ড্রেসিং খাওয়ার অভ্যাস বাদ দিতে হবে। রিফাইন্ড খাবার বাদ দিয়ে খাবার খেতে হবে (যেমন- জুসের বদলে ফল, ভুসিসহ লাল আটা

শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে :
প্রতিদিন কমপক্ষে ৪০ মিনিট করে সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন জোরে জোরে হাঁটতে হবে। বাসার টুকটাক কাজ নিজের হাতে করার অভ্যাস করতে হবে। কাছাকাছি জায়গায় রিকশা না নিয়ে হেঁটে যাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। ধূমপান, তামাক ইত্যাদি নেশা বাদ দিতে হবে। ডায়াবেটিস রক্তচাপ ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

জীবনযাত্রার অভ্যাস পরিবর্তনের দু-তিন মাস পরও যদি রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে না আসে, তাহলে ওষুধ খেয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, যাদের পারিবারিকভাবে রক্তে অধিক কোলেস্টেরলের প্রবণতা আছে, তাদের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করা অন্যদের চেয়ে অনেক কঠিন। তাই তাদের অনেক বেশি চেষ্টা করতে হবে
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আপনার উপযোগী চিকিৎসা নিতে হবে। ওষুধ খাওয়ার সাথে সাথে জীবনযাত্রার অভ্যাসগুলোকেও মানতে হবে। রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে হৃদরোগ, ব্রেইন স্ট্রোক কিডনি ফেইলরের ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব

গ্যাস্ট্রিকের ৫টি ঘরোয়া সমাধান



গ্যাস্ট্রিকের ৫টি ঘরোয়া সমাধান

গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটির সাথে সবাই- কম বেশি পরিচিত। এই সমস্যাটি প্রায় মানুষের মধ্যেই রয়েছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের বদৌলতে গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটির অসংখ্য ঔষধ রয়েছে। পাশাপাশি আমরা চাইলে ঘরোয়াভাবে এই রোগটি প্রতিরোধ করতে পারি

পুদিনা পাতা: পুদিনা পাতার রস গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে বহুদিন ধরেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। প্রতিদিন পুদিনা পাতার রস বা পাতা চিবিয়ে খেলে এসিডিটি বদহজম থেকে দূরে থাকতে পারবেন

গুড়: গুড় আপনার বুক জ্বালাপোড়া এবং এসিডিটি থেকে মুক্তি দিতে পারে। যখন বুক জ্বালাপোড়া করবে সাথে সাথে একটুকরো গুড় মুখে নিয়ে রাখুন যতক্ষণ না সম্পূর্ণ গলে যায়। তবে ডায়বেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এটি নিষিদ্ধ

জিরা: এক চা চামচ জিরা ভেঁজে গুড়া করে নিন। এই গুড়াটি একগ্লাস পানিতে মিশিয়ে প্রতিবার খাবারের সময় পান করুন। এতে অনেকটাই সমাধান পাবেন আপনি

লং: আপনার যদি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থাকে, তবে লং হতে পারে আপনার সঠিক পথ্য। দুইটি লং মুখে নিয়ে চিবালে এর রস অনেকটা উপকারে আসতে পারে আপনার

মাঠা: দুধ এবং মাখন দিয়ে তৈরি মাঠা আমাদের দেশে খুবই জনপ্রিয়। এসিডিটি দূর করতে টনিকের মতো কাজ করে যদি এর সাথে সামান্য গোলমরিচ গুঁড়া যোগ করেন

কোনো রোগকেই অবহেলা করা উচিত নয়। ছোটখাটো গ্যাস্টিক অনেক সময় বড় রোগের কারণ হয়ে দাড়াতে পারে তাই প্রথম অবস্থাতেই এর সমাধান চিন্তা করুন। ডাক্তারি মেডিসিনের চেয়ে প্রাকৃতিক ঔষধের কার্যকারিতা বহুলাংশে বেশি

Saturday, April 25, 2015

নিয়মিত গ্রিন-টি পানের উপকারিতা



নিয়মিত গ্রিন-টি পানের উপকারিতা 

গ্রিন টির উৎপত্তি স্থল চীন স্বাস্থ্যবিষয়ক কিছু ওয়েবসাইটে জানানো হয়, ওষুধ হিসেবে গ্রিন টি হাজার বছর ধরে ব্যবহৃত হচ্ছে। সাধারণ চা আর গ্রিন টি মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে প্রক্রিয়াজতকরণে। অন্যান্য চা তৈরি করতেফারমেনটেইশনবা গাঁজন প্রক্রিয়া চালানো হয়ে, গ্রিন টি ক্ষেত্রে তা করা হয় না।

ফলে অন্যান্য চা থেকে গ্রিন টিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান পলি-ফেনলস বেশি থাকে। তাই অন্যান্য চা থেকে গ্রিন টি উপকারিতা বেশি।চা গাছের সবুজ পাতাই মুলত গ্রীন টি৷এই চায়ে রয়েছে ভিটামিন , ওসি৷ এছাড়াও রয়েছে ক্যালমিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম বিভিন্ন মিনারেল৷

আসুন জানা যাক গ্রীন টিয়ের বিস্ময়কর উপকারিতা সম্পর্কে

ওজন নিয়ন্ত্রনঃ
গ্রিন টি হজম ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। গ্রিন টি শরীরের মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে৷প্রতিদিন কমপক্ষে কাপ সবুজ চা খেলে অতিরিক্ত ৬৭ ক্যালোরি পোড়ানো যায়৷

যান্টি ভাইরাল অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়ালঃ
চায়ের ক্যাটেকাইন উপাদান অ্যান্টি ভাইরাল অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল হিসেবে বেশ কার্যকর। ফলে ইনফ্লুয়েঞ্জা থেকে ক্যান্সার পর্যন্ত সব রকমের রোগের প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে অনেক রোগ বিস্তারেও বাধা দেয় গ্রিন টি

রক্ত চাপঃ
নিয়মিত গ্রিন টি পান করলে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমে যায়

ডায়বেটিসঃ
খাওয়ার পর রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ে, যা প্রত্যক্ষভাবে নিয়ন্ত্রণ করে গ্রিণ টি। ফলে দেহে অতিরিক্ত চর্বি জমতে পারে না

হৃদরোগঃ
বিজ্ঞানীদের মতে, গ্রিন টি শরীরের প্রতিটি শিরায় কাজ করে। ফলে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে। তাই কোনো কারণে রক্ত চাপে পরিবর্তন হলেও কোন ধরনের ক্ষতি করে না। তাছাড়া এই চা রক্ত জমাট বাধতে দেয় না। ফলে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভবনা অনেক কমে যায়

খাদ্যনালীর ক্যন্সারঃ
গ্রিন টি খাদ্যনালীর ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। এছাড়াও ভালো কোষগুলোর কোনো ক্ষতি না করে সার্বিকভাবে ক্যান্সারের কোষ নির্মূল করে
কোলেস্টেরল
গ্রিন টি শরীরের ক্ষতিকর কলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় উপকারী কোলেস্টেরলের পরিমাণও বাড়ায়

ত্বকের যত্নঃ
মুখে বয়সের ছাপ বলিরেখা দূর করতে গ্রিন টি জুড়ি নেই। এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামাটরি উপাদান ত্বকে বলি রেখা পড়তে দেয় না। তাছাড়া এটি ত্বকের রোদে পোড়াভাব কমাতে ব্ল্যাক হেডস দূর করতে সাহায্য করে

দাঁতের সুস্থতাঃ
গ্রিন টিক্যাটেকাইননামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মুখের ভিতরের বিভিন্ন ব্যকটেরিয়া ভাইরাস ধ্বংস করে। যা গলার ইনফেকশনসহ দাঁতের বিভিন্ন সমস্যা কমিয়ে আনে

হতাশা থেকে মুক্তিঃ
প্রকৃতিকভাবেইথিয়ানিননামের অ্যামাইনো এসিড চা পাতায় পাওয়া যায়। এই উপাদান দুশ্চিন্তা হতাশা কমাতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত গ্রিন টি পান করলে অবসাদ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়ঃ
ক্যান্সারের জন্য দায়ী কোষ জন্মাতে বাধা দেয় গ্রিন টি, পাশাপাশি উপকারী কোষকে উজ্জীবিত করে।
তবে গ্রিন টি পানের ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয়ে সতর্ক থাকুন৷যেমন,
. খালি পেটে কখনই গ্রিন টি খাবেন না৷ভরা পেটে এই চা পান করবেন৷
. খাওয়ার পর নির্ধারিত বিরতির পর গ্রিন টি পান করুন৷
. রাত ৮টার পর গ্রিন টি পান করবেন না৷অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর হলেও এই চায়ে ক্যাফেইনের মতো উপাদান থাকায় রাতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে৷
. গ্রিন টি পান করলে বেশী করে জল খাবেন কারন ক্যালোরি পোড়ানোর যে উপাদানগুলি আছে এই চায়ের মধ্যে আছে তাতে বেশী করে জল না খেলে হজমে সমস্যা হতে পারে৷