কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রেখে সুস্থ থাকুন
কোলেস্টেরল রক্তের এমন এক উপাদান, যা রক্তে মিশে থাকে। রক্তনালী দিয়ে সারা শরীরে চলাচল করে। শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ রক্ত থেকে কোলেস্টেরল সংগ্রহ করে বিভিন্ন রকম হরমোন ও প্রয়োজনীয় জিনিস তৈরি করে থাকে। সুতরাং কোলেস্টেরল শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় চর্বিজাতীয় রক্তের উপকরণ, যা নির্দিষ্ট মাত্রা পর্যন্ত প্রয়োজন। কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত হলে তা রক্তনালীতে জমে যায়। আর জমে গেলে রক্তনালী সরু হয়ে রক্ত চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে।
ফলে শরীরে অনেক রকম সমস্যা দেখা দেয়।
যেমন- হার্টের
রক্তনালিতে জমলে বুকে ব্যথা, হার্ট
অ্যাটাক; মস্তিস্কের
রক্তনালিতে জমলে স্ট্রোক, কিডনির রক্তনালিতে
জমলে কিডনি
ফেইলর—এ
রকম অনেক
সমস্যা।
আমরা কীভাবে রক্তের
চর্বির মাত্রা
নিয়ন্ত্রণে আনতে পারি, তা জানা
এবং নিয়ন্ত্রণে
রাখার চেষ্টা
অত্যন্ত জরুরি।
Þ
প্রথমত, আমাদের
দৈনন্দিন জীবনযাত্রার
অভ্যাস পরিবর্তনের
মাধ্যমে ।
Þ
দ্বিতীয়ত, ওষুধ সেবনের মাধ্যমে আমরা
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে পারি।
খাদ্যাভ্যাস
পরিবর্তন :
খাদ্যতালিকায়
শাকসবজি, ফলের
পরিমাণ বাড়াতে
হবে। আঁশযুক্ত
খাবার খেতে
হবে। খোসাসহ
সবজি খাওয়া
ভালো। খাদ্যতালিকা
থেকে প্রাণিজ
চর্বি বাদ
দিতে হবে,
যেমন-খাসির মাংস, গরুর
মাংস, মুরগির
চামড়া, কলিজা,
মগজ, মাছের
ডিম, ডিমের
কুসুম, চিংড়ি
মাছ প্রভৃতি।
রান্নায় কম তেল
দিতে হবে।
তেলে ভাজা
খাবার কম
খেতে হবে।
ভাপে সেদ্ধ,
গ্রিলড খাবার
খাওয়ার অভ্যাস
করতে হবে।
ঘি, মাখন,
পনির, মেয়নেজ,
সালাদ, ড্রেসিং
খাওয়ার অভ্যাস
বাদ দিতে
হবে। রিফাইন্ড
খাবার বাদ
দিয়ে র
খাবার খেতে
হবে (যেমন-
জুসের বদলে
ফল, ভুসিসহ
লাল আটা।
শারীরিক
পরিশ্রম করতে হবে :
প্রতিদিন কমপক্ষে ৪০
মিনিট করে
সপ্তাহে অন্তত
পাঁচ দিন
জোরে জোরে
হাঁটতে হবে।
বাসার টুকটাক
কাজ নিজের
হাতে করার
অভ্যাস করতে
হবে। কাছাকাছি
জায়গায় রিকশা
না নিয়ে
হেঁটে যাওয়ার
অভ্যাস করতে
হবে। ধূমপান,
তামাক ইত্যাদি
নেশা বাদ
দিতে হবে।
ডায়াবেটিস ও রক্তচাপ ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ
করতে হবে।
জীবনযাত্রার
অভ্যাস পরিবর্তনের
দু-তিন
মাস পরও
যদি রক্তের
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে না আসে, তাহলে
ওষুধ খেয়ে
নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। মনে রাখতে
হবে, যাদের
পারিবারিকভাবে রক্তে অধিক কোলেস্টেরলের প্রবণতা
আছে, তাদের
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করা অন্যদের চেয়ে
অনেক কঠিন।
তাই তাদের
অনেক বেশি
চেষ্টা করতে
হবে।
চিকিৎসকের
পরামর্শ অনুযায়ী
আপনার উপযোগী
চিকিৎসা নিতে
হবে। ওষুধ
খাওয়ার সাথে
সাথে জীবনযাত্রার
অভ্যাসগুলোকেও মানতে হবে। রক্তের কোলেস্টেরল
নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে হৃদরোগ, ব্রেইন স্ট্রোক
ও কিডনি
ফেইলরের ঝুঁকি
এড়ানো সম্ভব।