রক্তদান
সুস্থ মানুষের কেজি প্রতি ৫০ মি.লি. রক্ত প্রয়োজন হয়। কিন্তু গড়ে
পুরুষের শরীরে কেজি প্রতি ৭৬ মি.লি. এবং নারীর ৬৬ মি.লি. রক্ত থাকে। এই উদ্বৃত্ত
রক্ত দান করলে
কোন ক্ষতি হয় না, বরং তা অন্যের জীবন বাঁচাতে পারে। প্রাপ্তবয়স্ক
যে কেউ
তিন থেকে চার মাস অন্তর রক্ত দিতে পারেন। উন্নত বিশ্বে চিকিৎসাক্ষেত্রে প্রয়োজনীয়
রক্ত স্বেচ্ছা সেবকদের কাছ থেকেই আসে। এটা তুলনামূলকভাবে নিরাপদ। পেশাদার
রক্তদাতার রক্তে একদিকে যেমন ঝুঁকি বেশি অন্যদিকে রক্তের মানও ভালো
থাকে না।
কেন রক্ত প্রয়োজন?
দেহের কোষগুলোয় অক্সিজেনসহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদান পৌঁছে দেয়া,
কার্বন
ডাই অক্সাইডসহ
অন্যান্য বর্জ অপসারণ, রোগজীবাণু ধ্বংস করা, শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখা,
ইত্যাদি
কাজে রক্ত অতি আবশ্যক।
এখন পর্যন্ত কৃত্রিমভাবে রক্ত তৈরি করা যায় না, অন্য প্রাণীর
রক্তও মানুষের
শরীরে দেয়া যায় না। মুমূর্ষু
রোগীর জীবন বাঁচাতে রক্ত তাই এত প্রয়োজনীয়।
বড় ধরনের অপারেশন বা দূর্ঘটনায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে কিংবা
অগ্নিদগ্ধ রোগীর
চিকিৎসায় রক্ত প্রয়োজন হতে পারে। এছাড়া প্রসূতি ও নবজাতকের বিভিন্ন জটিলতায় রক্ত
প্রয়োজন হতে পারে। রক্তাল্পতা,
ক্যান্সার,
থ্যালাসেমিয়া,
হিমোফিলিয়াসহ
বিভিন্ন রোগে রক্ত দেয়া প্রয়োজন হয়।
রক্ত দেয়ার উপকারিতা
রক্ত দেয়ার ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই শরীরে রক্তের পরিমাণ স্বাভাবিক
হয়ে যায়। অবশ্য লোহিত
রক্ত কণিকার পরিমাণ স্বাভাবিক হতে আরও সময় লাগে।
রক্ত দিলে হৃদরোগ, হার্ট এটাক, ক্যান্সার
প্রভৃতি রোগের ঝুঁকি কমে। এছাড়া রক্ত দেয়ার সময় দাতার রক্তচাপ, পালস ইত্যাদি দেখার পাশাপাশি
প্রয়োজনীয় স্ক্রিনিং
করার কারণে রক্তদাতা নিজের সুস্থতা সম্পর্কে আশ্বস্ত হতে পারেন।
যারা রক্ত দিতে পারেন
- রক্তদাতার বয়স ১৮ থেকে ৬০ এর মধ্যে হতে হয়।
- ওজন অন্তত ৪৮ কেজি হতে হয়।
- রক্তদানের সময় রক্তদাতার শরীরের তাপমাত্রা ৯৯.৫ ফারেনহাইটের নিচে এবং নাড়ির গতি ৬০ থেকে ১০০ বার এর মধ্যে হতে হয়।
- ওষুধ ছাড়া সিস্টোলিক রক্তচাপ ১০০ এবং ১৪০ থেকে পারদ চাপ এবং ডায়স্টোলিক রক্তচাপ ৬০ থেকে ১০০ পারদ চাপের মধ্যে হওয়া প্রয়োজন।
- পুরুষের ক্ষেত্রে রক্তের হিমোগ্লোবিন ১২.৫ গ্রাম/১০০ এমএল এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ১১.৫ গ্রাম/১০০ এমএল হওয়া দরকার।
- রক্তদাতাকে শ্বাসযন্ত্রের রোগ এবং চর্মরোগ মুক্ত থাকতে হয়। রক্তদাতার রক্ত পরিসঞ্চালন জনিত কোন রোগ আছে কিনা সেটাও দেখতে হয়।
- সিরিঞ্জের মাধ্যমে রক্ত গ্রহণকারীদের বাহুতে যে ধরনের স্কার মার্ক থাকে, তা আছে কিনা সেটা পরীক্ষা করা হয়।
- রক্ত দাতার রক্তে এইচআইভি, হেপাটাইটিস, সিফিলিস, ম্যালেরিয়া ইত্যাদি জীবাণু আছে কিনা পরীক্ষা করে নেয়া হয়।
প্রাসঙ্গিক প্রতিবেদন
- ব্লাড ব্যাংক
- পুলিশ ব্লাড ব্যাংক
- সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতি
- রেড ক্রিসেন্ট ব্লাড ব্যাংক সোসাইটি
- বাঁধন ব্লাড ব্যাংক
- কোয়ান্টাম ব্লাড সেন্টার
পোস্টটি ভাল
লাগলে অবশ্যই শেয়ার করুন :
[পোস্টটি ভাল লাগলে অবশ্যই
কমেন্ট বা
শেয়ার করুন , শেয়ার বা কমেন্ট দিলে আমাদের উৎসাহ বারে, তাই অবশ্যই শেয়ার করুন । ]
No comments:
Post a Comment