Friday, June 19, 2015

রক্তদান




রক্তদান
সুস্থ মানুষের কেজি প্রতি ৫০ মি.লি. রক্ত প্রয়োজন হয়কিন্তু গড়ে পুরুষের শরীরে কেজি প্রতি ৭৬ মি.লি. এবং নারীর ৬৬ মি.লি. রক্ত থাকেএই উদ্বৃত্ত রক্ত দান করলে কোন ক্ষতি হয় না, বরং তা অন্যের জীবন বাঁচাতে পারেপ্রাপ্তবয়স্ক যে কেউ তিন থেকে চার মাস অন্তর রক্ত দিতে পারেনউন্নত বিশ্বে চিকিৎসাক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় রক্ত স্বেচ্ছা সেবকদের কাছ থেকেই আসেএটা তুলনামূলকভাবে নিরাপদপেশাদার রক্তদাতার রক্তে একদিকে যেমন ঝুঁকি বেশি অন্যদিকে রক্তের মানও ভালো থাকে না

কেন রক্ত প্রয়োজন?
দেহের কোষগুলোয় অক্সিজেনসহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদান পৌঁছে দেয়া, কার্বন ডাই অক্সাইডসহ অন্যান্য বর্জ অপসারণ, রোগজীবাণু ধ্বংস করা, শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখা, ইত্যাদি কাজে রক্ত অতি আবশ্যক

এখন পর্যন্ত কৃত্রিমভাবে রক্ত তৈরি করা যায় না, অন্য প্রাণীর রক্তও মানুষের শরীরে দেয়া যায় নামুমূর্ষু রোগীর জীবন বাঁচাতে রক্ত তাই এত প্রয়োজনীয়

বড় ধরনের অপারেশন বা দূর্ঘটনায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে কিংবা অগ্নিদগ্ধ রোগীর চিকিৎসায় রক্ত প্রয়োজন হতে পারেএছাড়া প্রসূতি ও নবজাতকের বিভিন্ন জটিলতায় রক্ত প্রয়োজন হতে পারেরক্তাল্পতা, ক্যান্সার, থ্যালাসেমিয়া, হিমোফিলিয়াসহ বিভিন্ন রোগে রক্ত দেয়া প্রয়োজন হয়

রক্ত দেয়ার উপকারিতা
রক্ত দেয়ার ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই শরীরে রক্তের পরিমাণ স্বাভাবিক হয়ে যায়অবশ্য লোহিত রক্ত কণিকার পরিমাণ স্বাভাবিক হতে আরও সময় লাগে

রক্ত দিলে হৃদরোগ, হার্ট এটাক, ক্যান্সার প্রভৃতি রোগের ঝুঁকি কমেএছাড়া রক্ত দেয়ার সময় দাতার রক্তচাপ, পালস ইত্যাদি দেখার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় স্ক্রিনিং করার কারণে রক্তদাতা নিজের সুস্থতা সম্পর্কে আশ্বস্ত হতে পারেন

যারা রক্ত দিতে পারেন
  • রক্তদাতার বয়স ১৮ থেকে ৬০ এর মধ্যে হতে হয়
  • ওজন অন্তত ৪৮ কেজি হতে হয়
  • রক্তদানের সময় রক্তদাতার শরীরের তাপমাত্রা ৯৯.৫ ফারেনহাইটের নিচে এবং নাড়ির গতি ৬০ থেকে ১০০ বার এর মধ্যে হতে হয়
  • ওষুধ ছাড়া সিস্টোলিক রক্তচাপ ১০০ এবং ১৪০ থেকে পারদ চাপ এবং ডায়স্টোলিক রক্তচাপ ৬০ থেকে ১০০ পারদ চাপের মধ্যে হওয়া প্রয়োজন
  • পুরুষের ক্ষেত্রে রক্তের হিমোগ্লোবিন ১২.৫ গ্রাম/১০০ এমএল এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ১১.৫ গ্রাম/১০০ এমএল হওয়া দরকার
  • রক্তদাতাকে শ্বাসযন্ত্রের রোগ এবং চর্মরোগ মুক্ত থাকতে হয়রক্তদাতার রক্ত পরিসঞ্চালন জনিত কোন রোগ আছে কিনা সেটাও দেখতে হয়
  • সিরিঞ্জের মাধ্যমে রক্ত গ্রহণকারীদের বাহুতে যে ধরনের স্কার মার্ক থাকে, তা আছে কিনা সেটা পরীক্ষা করা হয়
  • রক্ত দাতার রক্তে এইচআইভি, হেপাটাইটিস, সিফিলিস, ম্যালেরিয়া ইত্যাদি জীবাণু আছে কিনা পরীক্ষা করে নেয়া হয়

প্রাসঙ্গিক প্রতিবেদন
  • ব্লাড ব্যাংক
  • পুলিশ ব্লাড ব্যাংক
  • সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতি
  • রেড ক্রিসেন্ট ব্লাড ব্যাংক সোসাইটি
  • বাঁধন ব্লাড ব্যাংক
  • কোয়ান্টাম ব্লাড সেন্টার

পোস্টটি ভাল লাগলে অবশ্যই শেয়ার করুন :  
[পোস্টটি ভাল লাগলে অবশ্যই কমেন্ট বা শেয়ার করুন , শেয়ার বা কমেন্ট দিলে আমাদের উৎসাহ বারে, তাই অবশ্যই শেয়ার করুন । ]

Monday, June 15, 2015

কয়েকটি সহজ উপায়ে অ্যাজমার প্রকোপ কমিয়ে আনুন



কয়েকটি সহজ উপায়ে অ্যাজমার প্রকোপ কমিয়ে আনুন 

অ্যাজমায় আক্রান্ত ব্যক্তির অ্যাটাক তখনই হতে দেখা যায় যখন কোনো কারণে তার ফুসফুসে বাতাস ঠিকভাবে সরবরাহ হতে পারে নাঅ্যালার্জি, বায়ুদূষণ, ধুলাবালি বা ফুসফুসে কোনো ইনফেকশনের কারণে অ্যাজমা অ্যাটাক হতে পারে আর এর ফলে দেখা দিতে পারে কাশি, শ্বাসকষ্ট এবং বুক ভারী হয়ে থাকার অনুভূতি
অ্যাজমার অনেক মেডিক্যাল ট্রিটমেন্ট থাকলেও এমন কিছু ঘরোয়া প্রতিকার আছে যাতে এর প্রকোপ কমিয়ে আনতে পারবেন আপনি নিজেই

১) আদা:

অ্যাজমার বিভিন্ন ওষুধ যেভাবে শ্বাসযন্ত্রের পেশি শিথিল করে কষ্ট কমিয়ে দেয় তেমনি প্রভাব রাখতে পারে আদা আদা ব্যবহার করে বেশ কয়েক ধরনের প্রতিকার তৈরি করা যেতে পারে
  • সমপরিমাণ আদার রস, ডালিমের রস এবং মধু মিশিয়ে নিনদিনে দুই থেকে তিনবার এক টেবিল চামচ করে এই মিশ্রণ পান করুন
  • দেড় কাপ পানিতে এক চা চামচ আদা বাটা মিশিয়ে নিনঘুমাতে যাবার আগে এই মিশ্রণ এক টেবিল চামচ করে পান করুন
  • এক ইঞ্চি আদা কুচি করে এক হাঁড়ি ফুটন্ত পানিতে দিনপাঁচ মিনিট রেখে এই মিশ্রণ ঠাণ্ডা করে পান করুন
  • এছাড়াও লবন দিয়ে কাঁচা আদা খেতে পারেন

২) সর্ষের তেল:

অ্যাজমা অ্যাটাক হলে সর্ষের তেল মালিশ করাটা বেশ উপকারীএর জন্য অল্প একটু কর্পূর দিয়ে সর্ষের তেল গরম করে নিতে হবে, এরপর তাপমাত্রা কুসুম গরম হয়ে আসলে তা রোগীর বুক ও পিঠে মালিশ করতে হবেদিনে কয়েকবার মালিশ করা হলে কষ্ট কমে আসবে

৩) ডুমুর

শ্বাসকষ্ট কমানো এবং শ্বাসযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখার ক্ষেত্রে ডুমুরের প্রভাব অতুলনীয়এর জন্য সারা রাত তিনটি শুকনো ডুমুর এক বাটি পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবেসকালে ওই পানি খালি পেটে পান করতে হবে এবং খেতে হবে ওই তিনটি ডুমুরমাস দুয়েক এই অভ্যাস বজায় রাখলে অ্যাজমার প্রকোপ নিজ থেকেই কমে আসবে

৪) রসুন

ফুসফুসে জমে থাকা কফ দূর করে এবং অ্যাজমার কষ্ট দ্রুত কমায় রসুন
  • ১০-১৫ টি রসুনের কোয়া ফুটিয়ে নিন আধা কাপ দুধেদিনে একবার এই মিশ্রণ পান করুন
  • রসুন দিয়ে চা তৈরি করেও পান করতে পারেনএর জন্য এক পাত্র ফুটন্ত পানিতে ফেলে দিন ২-৩ টি রসুনের কোয়া এবং ৫ মিনিট সেভাবেই রেখে দিন তাপমাত্রা কমে এলে পান করুন

৫) কফি

কফিতে থাকা ক্যাফেইন অ্যাজমার কষ্ট কমাতে সহায়কযত কড়া কফি পান করবেন তত দ্রুত সুফল পাওয়া যাবেতবে দিনে তিন কাপের বেশি কফি পান করবেন না

৬) ইউক্যালিপটাস তেল

এতে থাকে ইউক্যালিপটল নামের এক রাসায়নিক যা কফ কমাতে সাহায্য করেএকটি টাওয়েলে কয়েক ফোঁটা ইউক্যালিপটাস তেল নিয়ে ঘুমানোর সময়ে তা আপনার শিয়রে রাখতে পারেন
ফলে আপনার নিঃশ্বাসের সাথে এটি শরীরে প্রবেশ করবে এবং ঘুমের সময়ে শ্বাসকষ্ট হবে নাএছাড়াও একটি পাত্রে ফুটন্ত পানি নিয়ে তাতে ২-৩ ফোঁটা ইউক্যালিপটাস তেল নিয়ে নিঃশ্বাসের সাথে এই বাষ্প গ্রহণ করতে পারেনএতে ফলাফল পাবেন দ্রুত

ভাল লাগলে পোস্ট টি অবশ্যই শেয়ার করুন :  
[ ভাল লাগলে পোস্ট টি অবশ্যই কমেন্ট বা শেয়ার করুন , শেয়ার বা কমেন্ট দিলে আমাদের উৎসাহ বারে, তাই অবশ্যই শেয়ার করুন । ]

Saturday, June 6, 2015

পেঁয়াজে অ্যাজমা প্রতিরোধ

পেঁয়াজে অ্যাজমা প্রতিরোধ 

খাবারের সঙ্গে পেঁয়াজ খাওয়া প্রথম শুরু হয় ইরান, আফগানিস্তান, পাকিস্তান এসব অঞ্চলেঅবশ্য কয়েক হাজার বছর আগে চীনেও পেঁয়াজ খাওয়ার প্রচলন ছিলপ্রাচীন বেদ গ্রন্থে পেঁয়াজের কথা পাওয়া যায় প্রাচীন গ্রিসে অলিম্পিক খেলা শুরুর আগে ক্রীড়াবিদরা পেঁয়াজ গ্রহণ করতেন; পেঁয়াজের রস পান করতেন এবং পেঁয়াজের প্রলেপ গায়েও মাখতেন

এক কাপ পরিমাণ পেঁয়াজের টুকরো থেকে ৬৪ ক্যালরি, ১৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, দুই থেকে তিন গ্রাম ফাইবার, সাত গ্রাম চিনি, দুই গ্রাম প্রোটিন এবং দৈনন্দিন চাহিদার ১০ শতাংশ ভিটামিন-সি পাওয়া যায়এ ছাড়া সামান্য পরিমাণে ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফলিক এসিড, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাস পাওয়া যায়পেঁয়াজে বিভিন্ন সালফিউরিক উপাদান রয়েছে, যা ফ্লেবোনয়েড ও ফাইটো কেমিক্যালের উৎকৃষ্ট উৎস

পেঁয়াজ যেসব কাজ করে 
১। পেঁয়াজে এলিগো ফ্রুকটোজ নামে এক বিশেষ দ্রবণীয় ফাইবার রয়েছে, যা অন্ত্রে গুড ব্যাকটেরিয়া উৎপাদনে সাহায্য করেএভাবে পেঁয়াজ পরিপাকে পরোক্ষভাবে ভূমিকা রাখেপেঁয়াজ ডায়রিয়া প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় সাহায্য করে

২। পেঁয়াজে বিদ্যমান ক্রমিয়াম রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করেঅতিরিক্ত ইনসুলিন উৎপাদনে পেঁয়াজের সালফারের ভূমিকা রয়েছে

৩। পেঁয়াজের মধ্যে অ্যান্টি-ক্যানসারের বৈশিষ্ট্য রয়েছেপেঁয়াজে থাকা ফাইটো কেমিক্যালসের জন্য এতে বিশেষ ধরনের মিষ্টতা ও সুগন্ধ তৈরি হয়

৪। ফ্লেবোনয়েড বিভিন্ন ফল ও সবজিতে রঞ্জক পদার্থের ভূমিকা পালন করে গবেষণা থেকে জানা যায়, ফ্লেবোনয়েড আলঝেইমার, পারকিনসন, হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস করে

৫। কুয়ারসেটিন নামে একটি বিশেষ ফ্লেবোনয়েড ক্যানসার প্রতিরোধে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করেএটি দেহের হিস্টামিন তৈরিতে বাধা দেয় ফলে অ্যালার্জিজনিত বিক্রিয়া হ্রাস পায়কুয়ারসেটিন শ্বাস-প্রশ্বাসে যুক্ত পেশিকে শিথিল করে অ্যাজমার লক্ষণ থেকে মুক্তি দেয়এভাবে পেঁয়াজ হৃদরোগ, টাইপ টু ডায়াবেটিস, চোখের ক্যাটারেক্টস, উচ্চ রক্তচাপ, হুপিং কফ, ব্রনকাইটিস ও ডিহাইড্রেশন ইত্যাদি রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়

৬। পেঁয়াজের ফলিক এসিড দেহে অতিমাত্রার হমোসিসটিন তৈরিতে বাধা প্রদান করেফলে ভালো অনুভূতির হরমোন উৎপাদন স্বাভাবিক রাখেঘুম ও ক্ষুধা বৃদ্ধির মাত্রা স্বাভাবিক রাখে

ভাল লাগলে পোস্ট টি অবশ্যই শেয়ার করুন :  
[ ভাল লাগলে পোস্ট টি অবশ্যই কমেন্ট বা শেয়ার করুন , শেয়ার বা কমেন্ট দিলে আমাদের উৎসাহ বারে, তাই অবশ্যই শেয়ার করুন । ]