থানকুনি পাতা অনেক রোগের ডাক্তার
গ্রামাঞ্চলে বাড়ির আশেপাশে, রাস্তার পাশে
কিংবা ক্ষেতের আইলে ছোট ছোট তারার মত খাঁজকাটা এই পাতাগুলো দেখতে পাওয়া যায়। অনেক অভাবি
মানুষ ভাতের সাথে এই পাতাটিকে ভর্তা করে খায়। আবার স্বাদের কারণে অনেক ধনীরাও এই
পাতাটিকে ভর্তা করে খায়। তবে সব অঞ্চলের মানুষ থানকুনি পাতা নামে এই পাতাটিকে নাও চিনতে
পারে। অঞ্চলভেদে এই
পাতাটিকে টেয়া, মানকি, তিতুরা, থানকুনি, আদামনি, ঢোলামানি, থুলকুড়ি, মানামানি , ধূলাবেগুন, আদাগুনগুনি
নামে ডাকা হয়। এই
হলো
থানকুনি পাতার প্রাথমিক পরিচিতি।
বহু রোগের ডাক্তার এই পাতাটির ইংরেজি নাম Indian
Pennywort, ল্যাটিন
নাম Centella asiatica, বৈজ্ঞানিক নাম Centella
asiatica Urban এবং
পরিবার Mackinlayaceae.
ছোট্ট এই গাছটির মূল, কান্ড ও পাতার উপকারিতা:
- অল্প পরিমাণ আমগাছের ছাল, আনারসের কচি পাতা ১টি, কাঁচা হলুদের রস, ৪/৫ টি থানকুনি গাছ শিকড়সহ ভাল করে ধুয়ে একত্রে বেটে রস করে খালি পেটে খেলে পেটের পীড়া ভাল হয়। ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এটা আরো বেশি কার্যকর।
- আধা কেজি দুধে ১ পোয়া মিশ্রি ও আধা পোয়া থানকুনি পাতার রস একত্রে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে ১ সপ্তাহ খেলে গ্যাস্ট্রিক ভাল হয়।
- বেগুন/পেঁপের সাথে থানকুনি পাতা মিশিয়ে শুকতা রান্না করে প্রতিদিন ১ মাস খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়।
- প্রতিদিন সকালে খালিপেটে ৪ চা চামচ থানকুনি পাতার রস ও ১ চা চামচ মধু/ মিশিয়ে ৭ দিন খেলে রক্ত দূষণ ভাল হয়।
- নিয়মিত থানকুনি পাতার রস খেলে ত্বকের সতেজতা বাড়ে।
- জ্বর ও আমাশয়ে রস খেলে উপকার হয়।
- মুখে ঘা হলে থানকুনি পাতা সিদ্ধ পানি দিয়ে কুলি করলে ঘা কমে যায়।
- চুল ঝরা কমাতে পুষ্টিকর ভিটামিনসমৃদ্ধ খাবারের পাশাপাশি ৫-৬ চামচ থানকুনি পাতার রস দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে চুলপড়া কমবে।
- বাচ্চাদের কথা পরিষ্কার না হলে এক চামচ থানকুনি পাতার রস গরম করে প্রতিদিন খাওয়ালে কথা স্পষ্ট হবে।
- ঠাণ্ডা লাগলে ২০-২৫ ফোঁটা থানকুনির রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে উপকার পাবেন।
- প্রতিদিন
সকালে থানকুনির রস ১ চামচ, ৫/৬ ফোঁটা হলুদের রস (বাচ্চাদের লিভারের সমস্যায়) সামান্য চিনি ও মধুসহ ১ মাস খেলে
লিভারের সমস্যা ভাল হয়।
উল্লেখ্য: ছোট্ট এই উদ্ভিদটি বাড়ির ছাদে কিংবা বারান্দায় টবেও
চাষ করা যায়।